4 যারা পৌলের কাছাকাছি দাঁড়িয়েছিল, তারা বলল, “তুমি কি ঈশ্বরের মহাযাজককে অপমান করার দুঃসাহস দেখাচ্ছ?”
5 পৌল উত্তর দিলেন, “ভাইয়েরা, আমি বুঝতে পারিনি যে, উনিই মহাযাজক। আমি জানি যে, এরকম লেখা আছে, ‘তোমার স্বজাতির অধ্যক্ষ সম্পর্কে কটূক্তি কোরো না।’[a]”
6 তারপর পৌল যখন বুঝতে পারলেন যে, তাদের একাংশ সদ্দূকী ও একাংশ ফরিশী, তখন মহাসভার মধ্যে চিৎকার করে বললেন, “আমার ভাইয়েরা, আমি ফরিশী, একজন ফরিশীর সন্তান। মৃতদের পুনরুত্থান সম্পর্কে আমার প্রত্যাশার জন্যই আমার বিচার করা হচ্ছে।” 7 তিনি একথা বলার পর ফরিশী ও সদ্দূকীদের মধ্যে বিতর্ক বেধে গেল, সভা দুদলে ভাগ হয়ে গেল। 8 (সদ্দূকীরা বলে যে পুনরুত্থান নেই, স্বর্গদূতেরা বা আত্মারাও নেই, কিন্তু ফরিশীরা সেসব স্বীকার করে থাকে।)
9 তখন প্রচণ্ড কোলাহল শুরু হল। কয়েকজন শাস্ত্রবিদ যারা ফরিশী-দলভুক্ত ছিল, উঠে দাঁড়িয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু করল। তারা বলল, “আমরা এই লোকটির কোনো অন্যায় খুঁজে পাচ্ছি না। কোনো আত্মা বা স্বর্গদূত যদি এর সঙ্গে কথা বলে থাকে, তাহলে তাতেই বা কী?” 10 বিতর্ক এমন হিংস্র আকার ধারণ করল সেনানায়ক ভয় পেলেন যে তারা হয়তো পৌলকে টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেলবে। তিনি সৈন্যবাহিনীকে আদেশ দিলেন, নিচে নেমে গিয়ে তাঁকে তাদের কাছ থেকে জোর করে নিয়ে আনতে ও সেনানিবাসে নিয়ে যেতে।
11 সেই দিনই রাত্রিবেলায় প্রভু পৌলের পাশে এসে দাঁড়ালেন ও বললেন, “সাহসী হও! তুমি যেমন জেরুশালেমে আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছ, তেমনই তুমি রোমেও সাক্ষ্য দেবে।”
12 পরের দিন সকালবেলা ইহুদিরা এক ষড়যন্ত্র করল এবং একটি শপথে নিজেদের আবদ্ধ করল যে, যতদিন পর্যন্ত তারা পৌলকে হত্যা না করে, ততদিন পর্যন্ত তারা খাওয়াদাওয়া বা পান করবে না। 13 চল্লিশজনেরও বেশি লোক এই ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিল। 14 তারা প্রধান যাজকদের ও প্রাচীনবর্গের কাছে গিয়ে বলল, “আমরা এক গুরু-অঙ্গীকার করেছি যে, পৌলকে হত্যা না করা পর্যন্ত আমরা কিছুই খাবো না। 15 তাহলে এখন, মহাসভাকে সঙ্গে নিয়ে আপনারা সেনানায়কের কাছে এই অজুহাতে আবেদন করুন যে, তার সম্পর্কে আরও সঠিক তথ্য অনুসন্ধানের জন্য তাকে যেন আপনাদের সামনে নিয়ে আসা হয়। সে এখানে আসার আগেই তাকে আমরা হত্যা করার জন্য প্রস্তুত আছি।”
16 কিন্তু পৌলের ভাগ্নে যখন এই ষড়যন্ত্রের কথা শুনতে পেল, সে সেনানিবাসে গিয়ে পৌলকে সেকথা বলল।
17 পৌল তখন একজন শত-সেনাপতিকে ডেকে বললেন, “এই যুবককে সেনানায়কের কাছে নিয়ে যান, সে তাঁকে কিছু বলতে চায়।” 18 তাই তিনি তাকে সেনানায়কের কাছে নিয়ে গেলেন।
19 সেনানায়ক যুবকটির হাত ধরে তাকে এক পাশে নিয়ে গেলেন ও জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি আমাকে কী বলতে চাও?”
20 সে বলল, “ইহুদিরা একমত হয়েছে, আগামীকাল পৌলের বিষয়ে আরও তথ্য অনুসন্ধান করবে, এই অজুহাতে তাঁকে মহাসভার কাছে হাজির করার জন্য তারা আপনার কাছে আবেদন জানাবে। 21 আপনি তাদের কথায় সম্মত হবেন না, কারণ তাদের চল্লিশজনেরও বেশি লোক তাঁর জন্য গোপনে ওত পেতে আছে। তারা শপথ করেছে যে, তাঁকে হত্যা না করা পর্যন্ত তারা খাদ্য বা পানীয় গ্রহণ করবে না। তারা এখনই প্রস্তুত আছে, তাদের অনুরোধের প্রত্যুত্তরে আপনার সম্মতির অপেক্ষা করছে।”
22 সেনানায়ক যুবকটিকে বিদায় করার সময় সতর্ক করে দিলেন, “তুমি যে এই সংবাদ আমাকে দিয়েছ, একথা কাউকে বোলো না।”
23 এরপর তিনি তাঁর দুজন শত-সেনাপতিকে ডেকে তাদের আদেশ দিলেন, “আজ রাত্রি নয়টার সময় দুশো জন সেনা, সত্তরজন অশ্বারোহী ও দুশো বর্শাধারী সেনা কৈসরিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করার জন্য প্রস্তুত থেকো। 24 পৌলের জন্য আরও কয়েকটি ঘোড়ার ব্যবস্থা কোরো, যেন তাকে নিরাপদে প্রদেশপাল ফীলিক্সের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়।”
25 তিনি এভাবে একটি পত্র লিখলেন:
31 অতএব সৈন্যরা তাঁর আদেশ পালন করে রাত্রিবেলা পৌলকে সঙ্গে নিয়ে সুদূর আন্তিপাত্রিতে নিয়ে গেল। 32 পরের দিন অশ্বারোহী সেনাদের সঙ্গে তাঁকে পাঠিয়ে দিয়ে পদাতিকেরা সেনানিবাসে ফিরে গেল। 33 অশ্বারোহী সেনারা কৈসরিয়ায় পৌঁছে, তারা সেই পত্র প্রদেশপালকে দিল ও পৌলকে তাঁর হাতে সমর্পণ করল। 34 সেই পত্র পড়ে প্রদেশপাল জানতে চাইলেন, তিনি কোন প্রদেশের লোক। পৌল কিলিকিয়ার অধিবাসী জানতে পেরে, 35 তিনি বললেন, “তোমার অভিযোগকারীরা এখানে এসে উপস্থিত হলে আমি তোমার কথা শুনব।” এরপর তিনি পৌলকে হেরোদের প্রাসাদে পাহারাধীন রাখার আদেশ দিলেন।
<- প্রেরিত 22প্রেরিত 24 ->-
a 23:5 যাত্রা পুস্তক 22:28